photo

ডাঃ এ. এস. এম. নাজমুল হক জন্মগ্রহণ করেছেন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সবুজ শ্যামলে ঘেরা মোহাম্মদপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে। তাঁর পিতার নাম মরহুম নূরুল হক। তিনি ১৯৩১ সালে মেহেরপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে পাবনা এ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৩৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন। তার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৫ সালে বিএ পাশ করেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসার এবং প্রথম বাঙ্গালী হিসাবে আর্টিলারি কোরে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে সেনাবাহিনীর চাকুরী ত্যাগ করে গ্রামে হাজী ভরষ উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি তৎকালীন গাংনী থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে সংগঠনের দায়িত্ব পান এবং ১৯৯৮ সালে মৃত্যু অবধি তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ( MPA) নির্বাচিত হন, ১৯৭২ সালে তিনি গণপরিষদ (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন) এর সদস্য ছিলেন (MCA)  এবং ১৯৮৬ সালে নৌকার প্রতীক নিয়ে গাংনীর প্রথম নৌকার এমপি হন। সেলিনা আখতার বানু’র মাতার নাম মরহুমা নূরজাহান হক।

দশম জাতীয় সংসদে তার মেজবোন, সেলিনা আখতার বানু জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনয়নে রক্ষিত মহিলা আসন ৩০৭ এর সংসদ সদস্য ছিলেন।

ডা. এ এস এম নাজমুল হক তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হাজী ভরষ উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তিনি গাংনী পাইলট স্কুল থেকে এস এস সি এবং ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচ এস সি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

শিক্ষা জীবনে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি প্রথমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার দপ্তর সম্পাদক ১৯৯২-১৯৯৩ নির্বাচিত হন। ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি হিসেবে ১৯৯৫-১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার নেতৃত্ব দেন।

ছোট বেলা থেকেই তিনি ছাত্রলীগ করতেন। এবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এসে বিএনপি সরকারের আমলে নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। ছাত্রলীগকে অনেক বেগবান করার লক্ষ্যে তিনি সংগ্রাম করতে শুরু করলেন। প্রথমে তিনি দপ্তর সম্পাদক পদ পান। এর পরের কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক হোন। সেই সময় বিএনপি সরকার ক্ষমতায় ছিলো। গাংনী থেকে সেই রাজশাহীর মত জামাত বিএনপির ঘাটিতে গিয়ে এমনিতেই ছাত্রলীগের এত বড় পদ পেয়ে যাননি।

পরবর্তীতে তিনি তার দারুণ সাংগঠনিক  দক্ষতা ও সাহসের কারণে আবার সভাপতি মনোনীত হোন।

এইসময় তিনি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি রোটার‍্যাক্ট ক্লাব, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ,  ১৯৯৩-১৯৯৮ (তিনবার) মেডিকেল সার্ভিস ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন।

মেডিকেলে পড়া অবস্থায় তিনি মানুষের বিপদে পাশে দাড়িয়েছেন সবসময়।

শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি ঢাকায় কর্মজীবন শুরু করেন। ঢাকার কয়েকটি স্বনামধন্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন, যার মধ্যে স্কয়ার হসপিটাল, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অন্যতম। তিনি ২৩  তম বিসিএস এর চিকিৎসা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন এবং দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল বরিশালের ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলায় চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত হন।  সর্বশেষ তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদে থেকে চিকিৎসা সেবার মানউন্নয়নে ভুমিকা রাখেন। এসময় তিনি ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা,  অনেক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সাথে হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। স্বাস্থ্য শিক্ষার ক্ষেত্রেও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। 

এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনীতি যাদের রক্তের ভিতর মিশে আছে তাদের কাছে রাজনীতি মানে মানুষের সেবা করা,মানুষের কল্যাণে কাজ করা। তিনি ঠিক তেমনি একজন। ছোট বেলা থেকে রাজনৈতিক শিক্ষা লাভ করেছেন আদর্শিক পিতার কাছ থেকে। 

ডাক্তার হওয়ার পর তিনি মানুষকে সেবা ও উপকার করেছেন গাংনীর মানুষদের জন্য তিনি সবসময় ভাবেন। জীবনের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে তিনি গাংনীর মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন।

বর্তমানে তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির প্রতি আস্থাশীল হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে সরকারি চাকুরী থেকে ইস্তফা প্রদান করেছেন।

তিনি করোনা মহামারীর সময় তিনি তার সাধ্যমতো মানুষের পাশে আছেন। করোনার শুরু থেকেই খাদ্য, অর্থ,চিকিৎসা সেবা, সচেতনতা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের পাশে এখনো আছেন। এছাড়া তিনি সামাজিক সংগঠন ও সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সামাজিক সংগঠন “নূরুল হক ফাউন্ডেশন” এর অন্যতম উদ্যোক্তা। নূরুল হক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রসার, মেধাবী শিক্ষার্থীদের উসাহ প্রদানের জন্য নিজস্ব ও পারিবারিক অর্থায়নে বৃত্তি প্রদান এবং বিনামূল্যে “হেলথ ক্যাম্প” পরিচালনা করেন।

 

Share This